১৭ নভেম্বর, ২০১৩

সচীন ও আমি

আজ হঠাৎ কেমন যেন মনে হচ্ছে বুড়ো হয়ে গেলাম। হ্যাঁ, সচীন রিটায়ার করার সিন-টা টিভি-তে দেখতে দেখতেই। সচীনের ফ্যান তাই? সে আর কে না?!

কিন্তু না,সেটা কারণ না। সচীনের চেয়েও আমি বড় ফ্যান সৌরভের। সৌরভ যখন রিটায়ার করেছিল তখন কষ্ট হয়েছিল, হয়েছিল ক্ষোভ, অভিমান, রাগ, হতাশা। সৌরভ নিজেও খেলা ছেড়েছিল রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে, অভিমানে। সুতরাং, ব্যাপারটা ঠিক সেটা নয়।

সৌরভ যখন খেলতে এসেছিল ৯৬ সালে (৯২ ভুলে যেতে চাই) তখন আমি খেলা দেখে দেখে বেশ অনেকটাই পোক্ত। বিশ্বকাপে হেরে ক্রিকেটের প্রতি খানিকটা বীতশ্রদ্ধও। সেই সময় সৌরভের আবির্ভাব ও সাফল্য আমায় আবার খেলা দেখতে বাধ্য করল।

কিন্তু সচীন আলাদা। আমার ১১ বছর বয়সে সচীনের প্রথম ম্যাচ। অর্থাৎ যবে থেকে খেলা একটু একটু বুঝতে পেরেছি, নিজে বিশ্লেষণ করতে শিখেছি, তবে থেকেই সচীন আছে।

সচীনকে আমি কৈশোরে পেয়েছি, আর সৌরভকে পাওয়া কৈশোর শেষ হয়ে যাওয়ার পর। এ যেন ছেলেবেলার খেলার সাথী আর প্রথম যৌবনের প্রেম।
ভালোবাসার টান দুজনের প্রতিই সারাজীবন থাকবে, কিন্তু দুরকম ভাবে।

সচীন ছোটবেলার স্মৃতি। আরো অনেক জিনিসের মতো সচীনের সঙ্গেই যেন আমি বড়ো হয়েছি।

যতদিন সচীন ছিল, ততদিন আমি যেন বলতে পারতাম, 'ওই দেখো, আমার ছেলেবেলার সাথী সচীন এখনো কেমন খেলছে। আমারও তার মানে তেমন বয়েস হয়নি, আমি আরো কিছু করতে পারবো।' কিন্তু আজ সচীন নেই মানে আমার ছেলেবেলাও আর নেই। কে যেন আজ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলছে, 'দেখ, সচীন-ও রিটায়ার করে গেল। তোর যা যা করার স্বপ্ন ছিল, সব শেষ। জীবন এবার আস্তে আস্তে বোঝা হয়ে যাবে।'

পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব এই আমির পক্ষে এই বোধটাই আজ সবচেয়ে বেশী পীড়াদায়ক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন